দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী জীবনী Allama Delwar Hossain Saidi
আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় পাঠক বন্ধুগণ আপনাদের প্রতি শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি আজকের আলোচনা। আজকের আলোচনায় আমরা জনপ্রিয় একজন ব্যক্তির বিষয় সম্পর্কে জানাবো। বর্তমান সময়ে তিনি ইসলামিক আলোচনা সাথে যুক্ত নেই। তবে তিনি তার ইসলামিক বক্তব্যে সুর ও বিষয়ভিত্তিক সুষ্ঠু বক্তবের মাধ্যমে জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন।
যদিও আমরা সকলে জেনে থাকব তিনি বর্তমান সময়ে ইসলামিক আলোচনার সাথে বিচ্ছিন্ন রয়েছেন তবে এখনো অনেক জনপ্রিয়তা রয়েছে এই ব্যক্তির। তিনি দীর্ঘদিন আগেই ইসলামিক আলোচনা এসে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। দীর্ঘদিন পূর্বে তার দেওয়া বক্তব্য গুলো এখনো মানুষ শুনে থাকেন। সুন্দর কণ্ঠস্বর এর জাদুতে জনপ্রিয়তার শীর্ষে অবস্থান করেছেন দেলোয়ার হোসেন সাঈদী। এমন একজন ব্যক্তির বিষয় সম্পর্কে আজকে আমরা আপনাদেরকে বায়োডাটা প্রদান করব অবশ্যই আমাদের সম্পূর্ণ আলোচনার সাথে থাকবেন।
আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদী তিনি অবশ্যই একজন বাংলাদেশী, ইসলামিক আলোচক এর উপর ভিত্তি করে বেশ জনপ্রিয় তবে এর পাশাপাশি তিনি একজন রাজনীতিবিদ। আজকের আলোচনায় আমরা এই ব্যক্তির বিষয় সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ একটি জীবনী অর্থাৎ বায়োডাটা দিয়ে আপনাদের সহযোগিতা করব। আশা করছি আমাদের সাথে থেকে এই ব্যক্তির বিষয় সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ জ্ঞান অর্জন করতে পারবেন। রাজনীতি জীবন এর পাশাপাশি ইসলামিক কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত থেকে যে ভালোবাসা অর্জন করেছে সেই সমস্ত বিষয়ে সম্পর্কে সঠিক তথ্য প্রদানের অঙ্গীকার নিয়ে আজকের এই আলোচনা।
দিলাওয়ার হোসেন সাঈদীর বায়োগ্রাফি
বায়োগ্রাফি সম্পর্কিত আরো একটি আলোচনায় আপনাদের স্বাগতম জানাচ্ছি আশা করছি আলোচনার এ পর্যায়ে আপনারা জানতে পেরেছেন আমরা কোন বিশেষ ব্যক্তির বিষয় সম্পর্কে আপনাদের জানানোর আগ্রহ নিয়ে উপস্থিত হয়েছি। সকলের পরিচিত একজন দ্বীনি ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষ জনাব মোঃ দিলেওয়ার হোসেন সাঈদীর । আজকের আলোচনায় আমরা এই ব্যক্তির জন্মস্থান জন্ম সাল এবং জন্ম তারিখ এর পাশাপাশি বাবা মায়ের নাম বয়স ধর্ম পেশা নাগরিকত্ব জাতীয়তার পাশাপাশি পারিবারিক বেশ কিছু বিষয় সম্পর্কে জানিয়ে সহযোগিতা করব।
সুতরাং এই ব্যক্তির বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানার আগ্রহ থেকে থাকলে অবশ্যই আমাদের পুরো আলোচনার সাথে থাকবেন আমরা চেষ্টা করছি আপনাদেরকে আপনার প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো তুলে ধরে সহযোগিতা করতে অবশ্যই পূর্ণাঙ্গ আলোচনা সাথে থেকে এই ব্যক্তির বিষয় সম্পর্কে বায়োডাটার সাথে যুক্ত বিষয়গুলো সঠিকভাবে জেনে নিতে পারবেন।
এর পাশাপাশি রাজনীতির সাথে যুক্ত থাকায় রাজনৈতিক অনেক বিষয় সম্পর্কে জানার আগ্রহ প্রকাশ করেন অনেক ব্যক্তি আমরা চেষ্টা করব রাজনৈতিক বিষয়গুলো সম্পর্কে জানিয়ে আপনাদের সহযোগিতা করতে হবে এর জন্য আমাদের সম্পন্ন আলোচনার সাথে থাকার অনুরোধ করছি।
আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী একজন বাংলাদেশী ইসলামী পণ্ডিত, বক্তা এবং রাজনীতিবিদ ও প্রাক্তন সংসদ সদস্য, যিনি ১২ জুন ১৯৯৬ থেকে ২৯ ডিসেম্বর ২০০৮ পর্যন্ত একজন সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
আল্লামা সাঈদীর জীবনী
জন্মঃ-
১৯৪০ সালের ২রা ফেব্রুয়ারি পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানী গ্রামে আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী জন্ম গ্রহন করেন।
পিতার নামঃ
ইউসুফ সাঈদী যিনি একজন স্বনামধন্য ইসলামী পণ্ডিত বা আলেম ছিলেন।
মায়ের নামঃ-
আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মায়ের নাম গুলনাহার বেগম।
শিক্ষা জীবনঃ-
আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী পিতার প্রতিষ্ঠিত মাদ্রাসায় প্রাথমিক শিক্ষা জীবন সমাপ্ত করেন। পরে তিনি খুলনা আলিয়া মাদ্রাসায় কিছুদিন এবং পরে ১৯৬২ সালে ছারছিনা আলিয়া মাদ্রাসা থেকে কামিল পাশ করেন। কামিল পাশ করার পর বিভিন্ন ভাষা, ধর্ম, বিজ্ঞান , রাজনীতি, অর্থনীতি, পররাষ্ট্র নীতি ,মনোবিজ্ঞান ও বিভিন্ন তত্তের উপর দীর্ঘ ৫ বছর অধ্যায়ন করেন ।
দায়ী ইলাল্লাহঃ-
১৯৬৭ সাল থেকে তিনি “দায়িইলাল্লাহ” হিসেবে আত্মনিয়োগ করেন । মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন সাইদী পৃথিবীর অর্ধশতেরও বেশি দেশে আমন্ত্রিত হয়ে ইসলামের সু-মহান আদর্শ মানুষের কাছে তুলে ধরেছেন। দেশে তাঁর ৫০ বছরের ইসলাম প্রচারের নমুনা সংক্ষেপে দেখুন:-
ক. চট্টগ্রাম প্যারেডগ্রাউন্ড ময়দানে প্রতি বছর ৫ দিন করে দীর্ঘ ২৯ বছর মাহফিল অনুষ্ঠিত হয় । পবিত্র কাবা শরীফের সম্মানিত ইমাম এ মাহফিলে দু’বার প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
খ. খুলনা সার্কিট হাউজ ময়দানসহ শহরের বিভিন্ন মাঠে প্রতি বছর ২ দিন করে দীর্ঘ ৩৮ বছর তাফসীর মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
গ. সিলেট সরকারী আলীয়া মাদ্রাসা মাঠে প্রতি বছর ৩ দিন করে দীর্ঘ ৩৩ বছর যাবৎ তাফসীর মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
ঘ. রাজশাহী সরকারী মাদ্রাসা মাঠে প্রতি বছর ৩ দিন করে দীর্ঘ ৩৫ বছর যাবৎ তাফসীর মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
ঙ. বগুড়া শহরে প্রতি বছর ২দিন করে দীর্ঘ ২৫ বছর যাবৎ তাফসীর মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
চ. ঢাকা কমলাপুর রেলওয়ে ময়দান ও পল্টন ময়দানে প্রতি বছর ৩ দিন করে দীর্ঘ ৩৪ বছর যাবৎ তাফসীর মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
ছ. কুমিল্লা কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে তিনদিন ব্যাপী প্রায় দীর্ঘ ৩১ বছর যাবৎ তাফসীর মাহফিলঅনুষ্ঠিত হয়।
রাজনৈতিক জীবনঃ-
১৯৭৯ সালে সাধারণ সমর্থক হিসেবে আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী বাংলাদেশ জামায়াত-ই- ইসলামী এ যোগদান করেন। ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ জামায়াত-ই- ইসলামীর মজলিসে শুরার সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। সর্বশেষ বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ জামায়াত-ই- ইসলামীর নায়েবে আমীরের দ্বায়িত্ব পালন করেছেন।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনেঃ-
ক. ১৯৭৬ সাল থেকে সৌদি আমন্ত্রনে রাজকীয় মেহমান হিসেবে আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী হজ্জব্রত পালন করে আসছেন। ১৯৯০ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর রমজান মাস মক্কা মদীনায় থাকা তাঁর রুটিন হয়ে গিয়েছিল।
খ. ১৯৮২ সালে ইমাম সৈয়দ আলী হোসেনী খমিনির আমন্ত্রনে ইরানের প্রথম বিপ্লব বার্ষিকী উজ্জাপন উপলক্ষে আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী তেহরান সফর করেন । ১৯৯১ সালে সৌদি বাদশার আমন্ত্রনে কুয়েত – ইরাক যুদ্ধের মিমাংসা বৈঠকে তিনি যোগদান করেন । ১৯৯১ সালে ইসলামী সার্কেল অফ নর্থ অ্যামেরিকা তাকে “আল্লামা” খেতাবে ভূষিত করে।
গ. ১৯৯৩ সালে নিউইয়ার্কে জাতিসঙ্ঘের সামনে অ্যামেরিকান মুসলিম ডে প্যারেড সম্মেলনে মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীকে “গ্র্যান্ডমার্শাল“ পদক দেয়া হয় । দুবাই সরকারের আমন্ত্রনে ২০০০ সালের ৮ই ডিসেম্বর আরব আমিরাতে ৫০,০০০ হাজারেরও বেশি শ্রোতার সামনে তিনি কোরআনের তাফসির পেশ করেন ।
ঘ. লন্ডন মুসলিম সেন্টারের উদ্ভধনি অনুষ্ঠানে কাবা শরিফের সম্মানিত ইমাম “শায়েখ আব্দুর রাহমান আস সুদাইসির” সাথে মাওলানা সাঈদী ও আমন্ত্রিত হন । মাওলানা সাঈদীর হাতে হাত রেখে ছয় শতাধিক অমুসলিম ভাই-বোন ইসলামের সুমহান আদর্শে দিক্ষিত হন।
অন্যান্য তথ্যঃ-
১ম কারাবরণঃ মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী ১৯৭৫ সালে প্রথম কারাবরণ করেন
হজ্বপালনঃ মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদী ১৯৭৬ সাল থেকে ২০১০ পর্যন্ত প্রতি বছর পবিত্র হজ্ব পালন করেন
আল্লামা উপাধীঃ ১৯৯১ সালে ইসলামিক সার্কেল অব নর্থ আমেরিকা কতৃক তিনি ‘’আল্লামা’’ উপাধিতে ভূষিত হন
গ্রন্থ রচনাঃ আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ৭৫টি গ্রন্থ রচনা করেন
প্রিয় রাজনৈতিক দলঃ জামায়াত-ই- ইসলামী বাংলাদেশ
প্রিয় ছাত্র সংগঠনঃ ছাত্রশিবির এবং ছাত্রী সংস্থা
প্রিয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব: আল্লামা মওদুদী রহঃ
প্রিয় বক্তাঃ শায়খ আঃ হামিদ কিশক, আহমদ দীদাত এবং সৈয়দ কামাল উদ্দিন জাফরী
প্রিয় লেখকঃ আল্লামা মওদুদী , হাসানুল বান্না ,ডঃ মুরিস বুকাইলি, মাঃ আঃ রহিম এবং কৃষাণ চন্দর
প্রিয় কবিঃ শেখ সাদী ,ওমর খৈয়াম ডঃ ইকবাল ,কাজী নজরুল এবং ফররুখ আহমদ
প্রিয় বন্ধুঃ অধ্যক্ষ মাওলানা সৈয়দ কামাল উদ্দিন জাফরী
ভয়ঃ আল্লাহ রাব্বুল আলামীনকে
ঘৃনাঃ দাম্ভিকতা ,কৃতঘ্নতা ,সময় অসচেতনতা এবং গিবত
স্বপ্নঃ বাংলাদেশে ইসলামী শাসন বাস্তবায়ন
কামনাঃ শহীদি মৃত্যু
অবসরেঃ অধ্যয়ন ,আত্মীয় স্বজনদেরকে সঙ্গদান
স্বরনীয় মুহূর্তঃ প্রথম কাবা দর্শন
জীবনের আদর্শ পুরুষঃ হযরত মুহাম্মদ সাঃ
২য় গ্রেফতারঃ ২৮ জুন ২০১০। এখন কথিত যুদ্ধাপরাধ মামলায় মৃত্যু দণ্ড এবং আপিলে যাবজ্জীবন জেল হওয়ায় তিনি জেল খানায় বর্তমান। তাকে ভালবেসে তার অবৈধ রায়কে কেন্দ্রকরে আন্দোলন ও প্রতিবাদ মিছিল করতে গিয়ে প্রায় ১৫০ এরও বেশি বাংলাদেশি বনি আদম শহিদ হন, তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা করি, আমিন। “আসুন আমরা সবাই কুরআনের পাখির জন্য প্রাণ উজার করে দোয়া করি ।