ফ্রী ফায়ার-পাবজিসহ ক্ষতিকারক সকল অনলাইন গেম বন্ধের নির্দেশ হাইকোর্টের ।

বাংলাদেশের জনপ্রিয় মোবাইল গেইম ফ্রি-ফায়ার, পাবজিসহ সব ধরনের ক্ষতিকর অনলাইন গেইম অবিলম্বে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। একইসাথে সবধরনের অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে টিকটক, বিগো লাইভ, পাবজি, ফ্রি ফায়ার গেম তথা লাইকির মতো সব ধরনের অনলাইন গেম এবং অ্যাপস বন্ধের কেন আদেশ দেওয়া হবে কি না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছিল। এসম্পর্কে সোমবার বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার হাইকোর্ট বেঞ্চ এ ধরনের একটি আদেশ দেন। দীর্ঘদিন ধরে চলা সোশ্যাল মিডিয়ায় উত্থাপিত এই দাবিতে সাড়া দেয়ায় জন্য আদালতকেকে স্বাগত জানাচ্ছে নেটিজেনরা। হাইকোর্টের এই আদেশকে কে সহমত জানিয়ে এমডি শামীম রেজা লিখেন, ‘এটা ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত।
এটা কার্যকর হলে, অনেকে হয়তো আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারবে এবং তাদের বাবা মাও অনেক শান্তি পাবে।’ এছাড়াও আরিফিন চৌধুরী এ সম্পর্কে লিখেছেন , ‘ এইসব প্রবল আসক্তির গেইমের জন্য,ছাত্র-ছাত্রীরা লেখাপড়া বাদ দিয়ে দিয়েছে’ এতে তারা আবার স্বাভাবিক লাইফে ফিরে আসতে পারবে। এগুলো হল বর্তমানে এগুলো থেকে বাঁচার একমাত্র পজিটিভ দিক এছাড়াও নেগেটিভ দিক হলো যে, অপরাধ অনেক বেশি পরিমানে বাড়তে পারে।আবার খেলা নিয়ে ব্যস্ত থাকার জন্য অন্য চিন্তা কম থাকতো যার কারনে ডিপ্রেশন বাড়তে পারে। এছারা তার ঘরে থাকতে না পেরে বাইরে যাবে, এতে বর্তমান পরিস্থিতিতে করোনা বাড়তে পারে।’
এছারাও সাইফুল আলম নজরুল মনে করেন যে, ‘তরুন প্রজন্মকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার স্বার্থে, নির্দেশ পালনেও হাইকোর্টকে ভূমিকা রাখতে হবে।’
রাজিব ওমর লিখেছেন যে, ‘কেবল নির্দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকলে হবে না, দরকার বাস্তব প্রয়োগ।’
শেখ রাসেল সংসয় প্রকাশ করে লিখেছেন যে, ‘আরও আগে বন্ধ করা উচিৎ ছিল! এটি আদৌ বাস্তবায়ন করা সম্ভব কিনা বলা মুশকিল।
হুমায়ন রাশিদ জীবন লিখেছেন যে, ‘দুঃখজনক হলেও এটাই সত্য যে লাইকি, টিকটক, পাবজি, ফ্রি ফায়ার আমাদের শিশু কিশোরদের ও সমাজটাকে এককভাবে শেষ করে দিচ্ছে। ঠিক একই ভাবে আবার ভারতীয় স্টার জলসা, জি বাংলা, স্টার প্লাস আসক্তি হয়ে অনেক ভালো ভালো ফ্যামলি আজ ধ্বংসের মুখে। এসব বন্ধ করলেও কোন লাভ নাই, আসক্তরা অন্য দেশের সার্ভার অথ্যাৎ ভিপিএন দিয়া ঠিকই চালিয়ে যাবে।’ বলে জানান।মমিনুর রহমানের দাবি হলো, ‘ভিপিএন এর মাধ্যমে যেনো খেলতে না পারে সে রকম কোন কঠোর ব্যাবস্থা গ্রহন করা হোক এবং টিকটক, লাইকি, ভিগো এগুলো বন্ধ করুন অতি দ্রুতভাবে।’
টিকটক লাইকি সহ সকল ক্ষতিকর অ্যাপস বন্ধের দাবি জানিয়ে এমডি খোরশেদুল আলম লিখেন, ‘টিকটক লাইকি এসব এপ্লিকেশনও ব্যান করা হোক যত দ্রুত সম্ভব । উঠতি বয়সের সব ছেলে-মেয়েগুলোকে নষ্ট করছে এসব ফালতু এপ্লিকেশনগুলো।’
উল্লেখ্য, সম্প্রতি পাশ্ববর্তী দেশ নেপালে কিছু দিন থেকে পাবজি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।এছাড়াও ভারতের গুজরাটেও এ গেইম খেলার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছিল। এমনকি গেমটি খেলার জন্য কয়েকজনকে পুলিশ গ্রেপ্তারও কটে ছিল। বাংলাদেশেও কিছু দিনের জন্য পাবজি সাময়িকভাবে বন্ধ করা হয়েছিল, পরে আবার পুনরায় চালু করা হয়।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হাইকোর্ট তিন মাসের নিষেধাজ্ঞার নির্দেশ দিয়েছে অনলাইন গেমের মতো প্লেয়ারঅনন’স ব্যাটলগ্রাউন্ড, যা জনপ্রিয়ভাবে PUBG, এবং Garena Free Fire, যা ফ্রি ফায়ার নামেও পরিচিত। শুনানিতে রাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্বকারী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো রাসেল চৌধুরীর মতে, সোমবার একটি রিট আবেদনের জবাবে টিকটোক এবং লাইকির মতো ভিডিও শেয়ারিং এবং স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম কেন নিষিদ্ধ করা হবে না তা জানতে চেয়ে একটি রুল জারি করেছে আদালত।
এই নিয়মে আরও জিজ্ঞাসা করা হয়েছে যে কেন এই ধরনের গেমস এবং ভিডিও স্ট্রিমিং পরিষেবাগুলির তত্ত্বাবধান ও পর্যালোচনা করার জন্য একটি উচ্চ-স্তরের কমিটি গঠন করা উচিত নয় এবং কেন এই ধরনের বিষয়ে একটি নীতিমালা তৈরির নির্দেশ দেওয়া উচিত নয়।
আসামিদের মধ্যে ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, বিটিআরসি চেয়ারম্যান, শিক্ষা সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, স্বাস্থ্য সচিব এবং পুলিশ মহাপরিদর্শক। যারা নিয়মের জবাব দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন তাদের জবাব দেওয়ার জন্য 10 দিন সময় রয়েছে।
আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি মো মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো কামরুল হোসেন মোল্লার হাইকোর্ট ভার্চুয়াল বেঞ্চ এই সিদ্ধান্ত নেয়।
অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির পল্লব আদালতে আবেদনটি পেশ করেন। আবেদনটি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ কাওসারও সমর্থন করেছিলেন।
দুইজন আবেদনকারী 19 জুন বিবাদীদের একটি আইনি নোটিশ পাঠিয়েছিলেন এই গেমস এবং অনলাইন ভিডিও স্ট্রিমিং অ্যাপের নেতিবাচক প্রভাব শিশু, কিশোর এবং তরুণ প্রজন্মের অন্যান্য সদস্যদের ওপর তুলে ধরে।
তারা বলেন, এই গেমস এবং অ্যাপগুলি বাংলাদেশের শিশু ও কিশোরদের মধ্যে আসক্তির দিকে পরিচালিত করছে এবং কিশোর -কিশোরীদের মধ্যে “সহিংস মানসিকতা” গড়ে তোলার সময় জাতির “শিক্ষা, সংস্কৃতি এবং মূল্যবোধের” ক্ষতি করছে। তারা দাবি করেছিল যে এই গেমস এবং অ্যাপগুলি নিষিদ্ধ বা সীমাবদ্ধ করা হোক। তাদের আইনি নোটিশের জবাব পেতে ব্যর্থ হওয়ার পর, আবেদনকারীরা হাইকোর্টের কাছে একটি আদেশ চেয়েছিলেন।
এটা ছিল আজকের রায়ে।এই রকম সব আপডেট পেতে আমাদের সাথে থাকুন। পোস্ট টি পড়ার জন্য সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ।