Health

লেবুর অসাধারণ কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা জানতে ক্লিক করুন ।

লেবু একটি জনপ্রিয় ফল যা ব্যবহার করলে খাবারের স্বাদ অনেকটা ভিন্নতা অনুভব হয়। লেবু ভিটামিন সি যুক্ত ফল। একটি ৫৮ গ্রামের লেবু তে ৩০ মিলিগ্রাম এর বেশি ভিটামিন সি সরবরাহ করতে পারে ।ভিটামিন-সি সুস্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য যার অভাবে শরীরে বিভিন্ন সমস্যা দেখা যাশ। এই নিবন্ধটিতে লেবুর পুষ্টিকর বিষয়বস্তু, লেবুর সম্ভাব্য স্বাস্থ্য উপকারিতা, খাবারের লেবুর ব্যবহারের উপায় এবং অতিরিক্ত লেবু ব্যবহারের সম্ভাব্য স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে আলোচনা করব।

লেবু ভিটামিন সি ও ফ্লেভোনয়েডর একটি চমৎকার উৎস, যা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস সমৃদ্ধ।অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুলি রেডিক্যাল সরিয়ে ফেলতে সাহায্য করে যা শরীরের কোষের ক্ষতি করতে পারে। এই পুষ্টি উপাদান গুলি রোগ প্রতিরোধে এবং সুস্বাস্থ্য ও সুস্থ্যতা বজায় রাখতে সহায়তা করে।

স্ট্রোকের ঝুঁকি হ্রাস করে

 ২০১২ সালের এক রিচার্জ অনুসারে, সাইট্রাস ফলের ফ্ল্যাভোনয়েডগুলি মহিলাদের মধ্যে ইস্কেমিক স্ট্রোকের ঝুঁকি হ্রাস করে। 70,000 মহিলাদের উপর 14 বছরের একটি গবেষণা করে দেখা গেছে যে যারা সবথেকে বেশি সাইট্রাস ফল খেয়েছেন তাদের মধ্যে ইস্কেমিক স্ট্রোকের ঝুঁকি 19 শতাংশ কম ছিল, ইসকেমিক স্ট্রোক সবচেয়ে সাধারণ ধরণের একটি স্ট্রোক। যখন রক্ত ​​জমাট বাঁধা মস্তিস্কে রক্তের প্রবাহকে বাধা দেয় তখন এটি হতে পারে। 2019 সালে আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে যে দীর্ঘমেয়াদী, ফ্লেভোনয়েডযুক্ত খাবারের নিয়মিত ব্যবহার ক্যান্সার এবং কার্ডিওভাসকুলার রোগ থেকে রক্ষা করতে পারে। তবে সমীক্ষায় ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, যে ব্যক্তিরা প্রচুর ধূমপান করেন এবং মদ পান করেন তাদের উপকারের সম্ভাবনা অনেক কম।

রক্ত চাপ

2014 সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, যে মানুষেররা নিয়মিত হাঁটাহাঁটি করেন এবং প্রতিদিন লেবু পানি পান করে থাকে তাদের রক্তচাপ কম ছিল তাদের তুলনায় যে মানুষেরা নিয়মিত হাটেন না এবং লেবুর পানি পান করেন না তাদের রক্ত চাপ অনেক বেশি ছিল । তবে রক্তচাপ কমাতে লেবুর ভূমিকা নিশ্চিত হওয়ার জন্য আরো অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা উচিত কারন হাঁটাহাঁটির মাধ্যমে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।তাই সকলকেই শরীর চর্চার পাশাপাশি লেবু পানি পান করা খুবই জরুরি।

সুস্বাস্থ্য এবং সুন্দর ত্বকের জন্য লেবু

 ভিটামিন সি ত্বকের কোলাজেন সিস্টেম গঠনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করে।সূর্যের এক্সপোজার, দূষণ, বয়স এবং অন্যান্য কারণে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে। বেশ কিছু গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে প্রাকৃতিক ভাবে ভিটামিন-সি গ্রহণ করা অথবা ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট ব্যবহার করা এই ধরণের ক্ষতি রোধে সর্বচ্চ ভূমিকা পালন করে।আর লেবুতে অনেক পরিমান ভিটামিন -সি পাওয়া যায়।যা আমাদের ত্বককে সুস্থ ও প্রানবন্ত রাখতে অনেক সাহায্য করে থাকে।তাই আমাদের কে প্রতিদিন লেবু খেতে হবে।

হাঁপানি রোধে লেবু

যদি কেউ হাঁপানি রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন এবং তিনি চাচ্ছেন বিষয়টা যতটুকু সম্ভব নিয়ন্ত্রণে রাখতে তবে অবশ্যই আপনার বেশি পরিমাণে ভিটামিন সি এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান বেশি বেশি খাওয়া উচিত।এছাড়া যারা শ্বাসকষ্টে অথবা হাইপারসেনসিটিভিটিতে ভুগছেন তাদের জন্য ভিটামিন সি একটি কার্যকরী পুষ্টি উপাদান।আর লেবু হচ্ছে উচ্চ ভিটামিন সি সমৃদ্ব একটি ফল।যা সেব করলে হাপানি রোগ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে থাকে।ফলে আক্রান্ত ব্যাক্তি অনেকটা সুস্থ হয়ে ওঠে।তাই হাপানি নিয়ন্ত্রনে লেবু ভুমিকা অনেক।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি

লেবু ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যুক্ত হওয়ার কারনে় সাধারণ জ্বর, সর্দি জীবানুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে সহায়তা করে ।ভিটামিন-সি গ্রহণের ক্ষেত্রে সব সময় প্রাকৃতিক উপাদান কে বেশি গুরুত্ব দেয়া উচিত। এটি গবেষণায় করে প্রমান করা হয়েছে ।প্রাকৃতিক উপাদান যতোটুকু সহযোগিতা করে ভিটামিন সি পরিপূরক তা কোনভাবেই অন্য কিছু করতে পারেনা। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে অবশ্যই ভিটামিন সি যুক্ত খাবার অনেক বেশি বেশি খাওয়া উচিত। যেহেতু লেবু ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পরিমিত পরিমাণে লেবু সেবন করা শরীরের জন্য ভালো হয়ে থাকে।তাই আমরা প্রতিদিন লেবু খাব।যা আমার সুস্থ রাখতে অনেকটা সহায়তা করবে।

ওজন কমানো

 2008 সালে 20 জন মানুষের উপর একটি গবেষণা পরিচালনা করা হয়েছিল তাদের মধ্যে দশজনকে লেবু সহ খাবার দেয়া হয়েছিল এবং দশজনকে লেবু ছাড়া খাবার দেয়া হয়েছিলো। এতে দেখা গিয়েছিল যে, যারা লেবু সহ খাবার খেয়েছিলেন তাদের তুলনায় যারা লেবু ছাড়া খাবার খেয়েছিলেন তাদের ওজন বৃদ্ধি পাচ্ছিল । তবে লেবু সেবনে ওজন হ্রাস পায় কিনা এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের দ্বিমত রয়েছে, সম্ভবত ভবিষ্যতে কোনো গবেষণার ফলাফল আমাদেরকে এই বিষয়ে নিশ্চিত করবে। এছাও লেবু খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে তাই যাদের স্থুলতার সমস্যা রয়েছে তারা প্রতিদিন লেবু খেয়ে দেখতে পারেন।কারন লেবু আমাদের বাড়তি মেদকে খুব সহজেই ঝরিয়ে ফেলতে সহায়তা করে।এছাড়াও আমাদের শরীরের খারাপ কোস্টেরল কে রোধ করে।তাই আদেরকে লেবু খাওয়া উচিত।

এছাড়াও লেবু অনেক গুনাগুন রয়েছে যেমন

 ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ হওয়ায় লেবুর রস শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।প্রতিদিন সকালে হালকা গরম পানির সাথে লেবুর রস পান করা শরীরের পিএইচ ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে।হজম স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়তা করে।ভিটামিন সি এর সাথে লেবুও পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদির সমৃদ্ধ উৎস।সাধারণ সর্দি, কাশির জীবাণুর সাথে লড়াই করতে সহায়তা করে।ব্রণ, দাদের দাগ সহ ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে লেবু পানি একটি জনপ্রিয় প্রতিকার।কুসুম গরম পানির সাথে লেবুর রস মিশিয়ে খাওয়ার মাধ্যমে দ্রুত ওজন হ্রাস করা সম্ভব এটি হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।

লেবুর রস লিভারকে পরিষ্কার করার ক্ষেত্রেও খুব কার্যকর কারণ এটি লিভারকে বিষাক্ত পদার্থগুলি বের করতে উৎসাহ দেয়।লেবুর প্রদাহ বিরোধী গুণগুলি যেমন শ্বাস নালীর সংক্রমণ, গলা ব্যথা এবং টনসিলের প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করে।হালকা গরম পানির সাথে লেবুর রস পান করা জয়েন্ট এবং পেশীর ব্যথা কমাতে সহায়তা করে।হালকা গরম পানির সাথে লেবুর রস আপনার দাঁতের স্বাস্থ্যের জন্যও ভাল কারণ এটি দাঁতে ব্যথা রোধ করতে সহায়তা করে এবং জিঞ্জিভাইটিস প্রতিরোধ করে।তাই আমাদেরকে প্রতিদিন লেবু খেতে হবে।

লেবু আমাদের উপকার করে থাকে কিন্তু অতিরিক্ত কোন কিছুই ভালো নয়, তাই অতিরিক্ত খেলে কিছু সমস্যাও হতে পারে।

লেবুর রস এসিড সমৃদ্ধ। কিছু প্রতিবেদনে পরামর্শ দেয়া হয়েছে যে অতিরিক্ত লেবু খাওয়ার ফলে দাঁতের এনামেল ক্ষয় হয়ে যেতে পারে ।যদিও লেবু পানি পান করার সুবিধা অনেক বেশি, তবে অতিরিক্ত সেবনে কিছু অসুবিধা রয়েছে এখন আপনাদেরকে কিছু অসুবিধার কথা বলব আশা করছি ব্যাপারগুলি আপনাদেরকে কোন না কোন ভাবে উপকৃত করবে।

দাঁতের এনামেল ক্ষয় হয়ে যাওয়া

 বেশ কিছু গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, যারা অতিরিক্ত পরিমাণে লেবু পানি সেবন করেন তাদের দাঁতের এনামেল এবং ডেন্টিং ক্ষয় হয় গেছে, এবং যার কারনে তাদের হাইপারসেনসিটিভিটি অনুভব হতে পারে। লেবু অতিরিক্ত এসিড সমৃদ্ধ হওয়ায় অন্যান্য কোমল পানীয়র মত অতিরিক্ত লেবুর রস সেবন করার ফলে দাঁতের ক্ষয়রোগ সৃষ্টি হতে পারে। দাঁত ভালো রাখতে লেবুর জল খাওয়ার পরে ব্রাশ করে ফেলা সবচেয়ে ভালো।এছারা দাঁত ভালো রাখতে অবশ্যই দৈনিক দু’বার ব্রাশ এবং ফ্লসিং করা উচিত।তাই অতিরিক্ত পরিমাণে লেবু খাওয়া যাবে না।এতে আমাদের দাতেও এই সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।

ঘন ঘন প্রস্রাব হতে পারে

কিছু মানুষ বিশ্বাস করেন এক গ্লাস কুসুম গরম পানির সাথে লেবুর রস মিশিয়ে খাওয়ার ফলে বহুমূত্র রোগের সমস্যা হতে পারে, তবে বিশেষজ্ঞরা বলেন এমন কোনো গবেষণা নেই যার মাধ্যমে এটি প্রমান হয়েছে।তবে এা বলেছন যে অতিরিক্ত লেবু রস আমাদেরকে ঘন ঘন প্রস্রাবের সমস্যা ফেলতে পারে। আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণে লেবুর রস ব্যবহার পান করে থাকেন এবং আপনার এই অভিজ্ঞতা হয়, তবে আপনাকে বুঝতে হবে এটি লেবুর রসের কারণে নয় বরং পানিজাতীয় অন্য কোনো সমস্যার কারণেও হতে পারে ।তবে একটি বিষয় মানা হয় যে লেবুর মত এসিড জাতীয় ফল প্রস্রাবে জ্বালাপোড়ার কারণ হতে পারে,যদি আপনি বহুমূত্র অথবা প্রস্রাবে জ্বালাপোড়ার সমস্যায় ভুগে থাকেন এবং এ বিষয়টি পরীক্ষা করার জন্য এক সপ্তাহ লেবুর রস গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে পারেন অথবা বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন।

মাইগ্রেনের সমস্যা

অনেক মানুষের জন্য লেবুর পানি সেবন করা তাদের মাইগ্রেনের সমস্যার অন্যতম কারণ হতে পারে। গবেষণা অনুসারে আপনি যদি মাইগ্রেনের সমস্যায় ভুগে থাকেন তবে বেশি লেবু পানি খাওয়া থেকে বিরত থাকাই আপনার জন্য সবচেয়ে ভালো, এটি আপনার মাইগ্রেনের সমস্যা সৃষ্টির কারণ হতে পারে অথবা আপনার মাইগ্রেনের সমস্যা ফিরিয়ে আনতে পারে।তাই এই সময় আপনাকে অতিরিক্ত লেবু খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে এবং ডাক্তার এর পরামর্শ নিতে হবে।

InformerBD.Com

InformerBD.Com Deals with all kinds of topics. Variety of Educational, Agriculture, Technology, Entertainment, Quiz Results, Bizarre Results. We help with all kinds of information. Contact us to get the latest information.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button