বিকাশ পিন ভুলে গেলে রিসেট করার নিয়ম
আপনারা বিকাশ একাউন্টের পিন ভুলে যাওয়ার সমস্যাটা রয়েছে। কিন্তু বিকাশ এর পিন ভুলে গেলে অনেকেই ঘাবরে যায়।কিন্তু ঘাবড়ানোর মত কোন কোনো কারণ নেই। আপনি সহজেই আপনার বিকাশ একাউন্টের পিন খুব সহজেই রিসেট করতে পারবেন।
তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক বিকাশ একাউন্টের পিন ভুলে গেলে সেটা কিভাবে পুনরায় আপনার পিন সেট করবেন।আসলে সহজ কয়েকটি ধাপে আপনি বিকাশ পিন রিসেট করতে পারবেন । তাহলে চলুন আজকের আলোচনা খুব সাবলিল ভাবে সেরে ফেলা যাক।নিচে এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো আসাকরি সম্পূর্ণ পোস্টটি আপনারা খুব মনোযোগ সহকারে পড়ে দেখবেন।কারণ এতে আপনারা খুব সহজেই শিখতে পারবেন কিভাবে বিকাশের পিন ভুলে গেলে তা খুব সহজেই আবার নতুন করে রিসেট দিতে পারেন।তাহলে শুরু করি আজকের মেইন টপিক।
বিকাশ পিন কি?
সলে পিন (PIN)
এর একটি পূর্নরুপ রয়েছে। পিন (PIN)
এর পূর্নরুপ হচ্ছে পারসোনাল আইডিন্টিফিকেশন নাম্বার।আর এর বাংলা অর্থ হলো ব্যক্তিগত সনাক্তকরণ সংখ্যা। পিন মূলত কয়েকটি সংখ্যার মাধ্যমে তৈরী একটি বিশেষ সংখ্যার কোড যা বিভিন্ন মাধ্যমে আপনার একাউন্ট লগিন করার ক্ষেত্রে প্রদান করতে হয়। কোনো ব্যক্তির একাউন্টের সিক্রেট পিন শুধুমাত্র সে ব্যাক্তি নিজেই জানবেন। অন্য কাউকে এই বিশেষ পিন বলে দেওয়া মানে নিজের নিরাপত্তাকে নিজেই দুর্বল করে দেওয়া।এতে আপনার একাউন্টের টাকা যেকেউ উত্তলন করে নিতে পারেন। এতে আপনার অনেক ক্ষতি হয়ে যেতে পারে তাই এই পিন কাওকে বলা যায় না।
বিকাশ যেহেতু একটি মোবাইল ব্যাংকিং পদ্ধতি তাই এর ক্ষেত্রেও এমন একটি পারসোনাল আইডিন্টিফিকেশন নাম্বার বা “পিন” রয়েছে। আর ব্যবহারকারীগণ একাউন্ট খোলার সময় এই পিন সেট করা বাধ্যতামূলক থাকে।নহলে বিকাশ খোলার কাজ সম্পূর্ণ হয় না। বিকাশ ব্যাবহারকারী দের এর যেকোনো সার্ভিস ব্যবহারের ক্ষেত্রে এই বিকাশ পিন প্রদান বাধ্যতামূলক।এই পিন না দিলে কেউ তার একাউন্ট থেকে কোন প্রকার বিল পে করতে পারবে না।আর যদি কেউ পিন ভুলে যায় আর ভুল পিন ৩ বার টাইপ করে তাহলে তার একাউন্ট বিকাশ কর্তৃপক্ষ অটোমেটিক ব্লক করে দেয়।
বিকাশ পিন লক হওয়ার কারণ
আসলে নিজ থেকে বিকাশ একাউন্ট এর পিন লক হওয়ার কারণ প্রকার নেই। কোনোনা কোন গ্রাহক যদি তার পিন ভুলে গিয়ে তিনবার ভুল বিকাশ পিন প্রদান করে থাকে তবে সেক্ষেত্রে বিকাশ পিন লক হয়ে যায় যেমনটি একটু আগে বলেছি। এটি মূলত গ্রাহক ব্যতীত অন্য কেউ যাতে বিকাশ থেকে অর্থ খরচ কিংবা উত্তোলন করতে না পারে, সেই লক্ষ্যে গৃহীত একটি গুরুত্বপূর্ণ সুরক্ষা স্তর।বিকাশ একাউন্ট ব্যবহারের সকল ক্ষেত্রেই এই বিশেষ পিনটির প্রয়োজন হয়েথাকে। ক্যাশ আউট থেকে শুরু করে মোবাইল রিচার্জ পর্যন্ত প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে বিকাশ পিন এর প্রদান করতে হয়। বিকাশ মোবাইল মেন্যু ব্যবহার কিংবা বিকাশ অ্যাপ এর মেইন স্ক্রিনে প্রবেশ করা সহ সকল ক্ষেত্রে বিকাশ পিন দেয়া লাগে।আর পিন না দিলে কোন কাজেই সম্পূর্ণ হয় না।
বিকাশ পিন ভুলে গেলে করণীয়
বিকাশ যেহেতু বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান ও সবচেয়ে বড় একটি মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে একটি, তাই সিকিউরিটির দিক দিয়ে সবচেয়ে বেশি কঠোর হবে এটাইতো স্বাভাবিক । নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে বিকাশ পিন ভুলে গেলে তা রিসেট এর ক্ষেত্রে একটি কার্যকরী ও সহজ একটি প্রক্রিয়া তৈরী করেছে বিকাশ কর্তৃপক্ষ ।
আগে যদি কেউ বিকাশ পিন ভুলে যেত তা হলে এই পিন রিসেট করার জন্য বিকাশ হেল্পলাইনে যোগাযোগ করতে হতো আর অনেক সময় ফোন দিয়েও এই কাজ সঠিক ভাবে সম্পূর্ণ হতোনা । তবে বর্তমানে বিকাশ পিন ভুলে গেলে গ্রাহক নিজে থেকেই বিকাশ পিন রিসেট করতে পারবেন যা খুবই ভালো ও সিক্রট একটি ব্যাপার।এতে করে কোন প্রকার মানসিক চাপের মুখে পরতে হয় না। কিন্তু আগে যদি কেউ বিকাশ এর পিন ভুলে যেত তাহলে তাকে অনেক স্টেপ পার করতে হতো এতে অনেকেই মানসিক একটি চাপ এর শিকার হতো কিন্তু বর্তমানে কোন গ্রাহককে এই রকম কোন পরিস্থিতির শিকার হতে হয় না।
বিকাশ পিন এর ক্ষেত্রে কিছু নির্দেশাবলী
বিকাশ পিন ভুলেগেলে বিকাশ কতৃপক্ষের তরফ থেকে কিছু নির্দেশাবলী দেয়া অাছে যা সকলকেই মানতে হবে।বিকাশ পিন ভুলে গেলে এই নির্দেশ গুলো অবশ্যই সব গ্রাহককে মানতে হবে। নিচে এগুলো দেওয়া হলোঃ
১.নতুন বিকাশ পিন অবশ্যই ৫ ডিজিটের হতে হবে।
২.পিন হিসেবে শুধু সংখ্যা ব্যবহার করা যাবে
৩.নতুন পিন সেট করার ক্ষেত্রে সর্বশেষ ব্যবহৃত তিনটি পিন ব্যবহার করা যাবে না
৪.পিন এর প্রথম সংখ্যাটি শূন্য (০) হওয়া যাবে না
৫.আট ঘণ্টার মধ্যে দুই বার বিকাশ পিন পরিবর্তন করা যাবে না
৬.ধারাবাহিক এবং একই ডিজিটের সংখ্যা, যেমনঃ 11111, 22222, 12345, 23456, 98765, 54321 ইত্যাদি সংখ্যা পিন হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।
এ বিষয় গুলো অবশ্যই সকল গ্রাহককে মাথায় রাখতে হবে এবং তারপর কাজ করতে হবে।
বিকাশ পিন রিসেট করার নিয়ম
বিকাশ মোবাইল ব্যাংকিং এর ইউএসডি মেন্যু ও বিকাশ অ্যাপ, এই দুইটি মাধ্যমেই বিকাশ একাউন্ট এর পিন বা বিকাশ পাসওয়ার্ড রিসেট করা যাবে নতুন ভাবে। চলুন তাহলে জেনে নেয়া যাক মোবাইল ব্যাংকিং মেন্যু ও বিকাশ অ্যাপ এর মাধ্যমে বিকাশ পিন রিসেট করার সঠিক ও সহজ মাধ্যম বা উপায়।
USSD বা মোবাইল ব্যাংকিং মেন্যু থেকে বিকাশ পিন রিসেট
২৪৭# ডায়াল করে বিকাশ মোবাইল ব্যাংকিং মেন্যু থেকে বিকাশের পিন নতুন করে রিসেট করা যাবে। USSD বা মোবাইল মেন্যু থেকে বিকাশ এর পিন রিসেট করতে নিচের স্টেপ গুলো ফলো করতে হবে যেগুলো নিচে দেওয়া হলোঃ
১.প্রথমে *247# ডায়াল করুন
২.Reset PIN অপশনে প্রবেশ করতে 9 লিখে রিপ্লাই দিন।
৩.এরপর আপনার এনআইডি/পাসপোর্ট/ড্রাইভিং লাইসেন্স নাম্বার চাওয়া হবে। আপনি বিকাশ একাউন্ট খোলার সময় যে ডকুমেন্ট ব্যবহার করেছেন সেই নম্বর (এনআইডি/পাসপোর্ট/ড্রাইভিং লাইসেন্স) লিখে সেন্ড করুন।
৪. জন্মসাল লিখে সেন্ড করুন
৫.গত ৯০ দিনের মধ্যে করা শেষ ১০টি লেনদেনের মধ্যে মনে আছে এমন একটি বাচাই করুন
৬. লেনদেনের এমাউন্ট লিখে সেন্ড করুন
৭. প্রদত্ত তথ্য সঠিক হলে এসএমএস এর মাধ্যমে একটি অস্থায়ী পিন পাবেন।
৮.আবার247# ডায়াল করুন
৯.1 লিখে সেন্ড করুন
১০.আবার 1 লিখে সেন্ড করুন
১১.এরপর এসএমএস এ পাওয়া অস্থায়ী পিনটি প্রদান করুন।
১২.নতুন পিন পরপর দুইবার প্রদান করুন
১৩.এরপর দেখবেন আপনার পিন সফলভাবে রিসেট হয়েছে।
এছাড়াও অস্থায়ী পিন পাওয়ার পর আপনি চাইলে বিকাশ অ্যাপে ঐ পিন দিয়ে লগিন করেও পিন আবার নতুন করে রিসেট করতে পারবেন।
বিকাশ এ্যাপ থেকে পিন রিসেট করার নিয়ম জানতে ক্লিক করুন ।