বসন্ত নিয়ে কবিতা ও পহেলা ফাল্গুনের কবিতা

পহেলা ফাল্গুনের
তুমি ভালো থাকো আর না থাকো
ফালগুন আসবেই এ দেশে ।
ফুল যদি ঝরে যায় , নদী যদি মরে যায়
ফালগুন আসবেই এই দেশে ।
আলো যদি নিভে যায় , আধিঁ যদি ছেয়ে যায়
ফালগুন আসবেই এই দেশে।
তুমি যদি না-ও চাও , তিল-তিসি না-ও দাও
ফালগুন আসবেই এই দেশে।
তুমি বেঁচে থাকো আর না থাকো
ফালগুন আসবেই এ দেশে ।
রঙ যদি মুছে যায়, স্বপ্নেরা ঘুচে যায়
ফালগুন আসবেই এ দেশে ।
যদি সুর উবে যায় চাঁদ-তারা ডুবে যায়
ফালগুন আসবেই এ দেশে।
হয়তো সে হাসবে না, আর ভালবাসবে না
হয়তো আসবে কেঁদে কেঁদে সে ।
বসন্ত নিয়ে
অনেক বড় বড় কবি রয়েছেন যারা বসন্ত নিয়ে কবিতা রচনা করে গেছেন। তাই আমরা দর্পন কবির, রবি ঠাকুরের এবং কোকিলের কবিতা আমাদের পোষ্টে দেওয়া হয়েছে।
বুকে নিয়ে শিমুল , পলাশ আর কৃষ্নো চূড়া
বুকে এতো রক্তিম লাল ছিল বলেই বুঝি-
একুশ স্বাধিনতা বসন্তের অর্জন !!
আমি ফালগুনের বার্তা বাহক –
কারন জন্ম আমার জারুল ফোটার কালে ,
বসন্তের ঝাঁপি খুলে –
আসুক পুষ্প – প্লাবন,
সবার অন্তরে প্রাণে।
বসন্তের – হলদে , বাসন্তী
হলদে, বাসন্তী লাল আর কমলা
শাড়ী নিয়ে মাতেয়াড়া, তরুণী-চপলা ।
হাত ভরে চুড়ি বাজে-রুনঝুন, রিনিঝিনি
মাটির গয়না-গাটি , জম্পেশ বিকি-কিনি ।
এক পায়ে মল আর গোল টিপ কপালে
সাজু গজু শুরু হয় সেই ভোর-সকালে ।
পান্জাবী,ফতুয়া-দুটোই যে চলছে
ছেলে গুলো হিমু হবে- সকলেই বলছে ।
সাথের জিন্সটা হলো কালচারে ফিউশন
মন্দ কি ভাবছে যে স্মার্ট জেনারেশন ।
ভাপা পিঠা , মোয়া-নাডু আর পাটিসাপটা
সাথে ফ্রি একদম হইচই, আড্ডা ।
প্রকৃতিতে প্রাণ জাগে, ফুলে ফুলে আগুন
শীত গেল চলে, আজ পহেলা ফাগুন ।
বসন্তের ভালোবাসার
ভালবাসা মাসে
কপোত কপোতী পাখা ঝেড়ে নেয়,
ভালবাসা আসে
তাদের ছোট্ট খোপটার ভিতর,
ভালবাসে শুধুই ভালবাসে।
দিবস জুঁড়ে সাদাবকেরা সঙ্গীর কাছে আসে নীলাকাশে
প্রশস্ত ডানায় সযত্নে রাখে ভালবাসা ,
বলে ওঠে এক সুরে….ভালবাসা
আজ তুমি বসন্ত হও।
ওদের ভালবাসা
ধীরে ধীরে বসন্ত হয়
গায়কপক্ষীও অস্থির
পিয়া কই পিয়া কই বলে,
পাখিদের কাছে
ভালবাসার সংজ্ঞা আছে,
কৌতুহলী আমায়
তারা শেখায়…… এভাবে দুহাত মুক্ত করো
নিজেকে মেলে ধরো,
গলা ছেড়ে গাও
উদার হও আকাশের চেয়েও
দেখবে চুপিসারে ভালবাসা আসবে,
আপনা থেকেই হৃদয়ে বাসা বাঁধবে।
গত ঘনমাঘের গা ঝেড়ে এবার আমিও
বলব এসো ভালবাসা তুমি বসন্ত হও।
আমাকে বাসন্তী করো।
ধীরে ধীরে ভালবাসা আসে
কানে কানে বলে,”তুমি আমার ঐশর্য নাও,বক্ষ পেতে দিলাম।
ভালবাসা আমি তোমার আজীবন বসন্ত হলাম।
বসন্তের প্রেমের ছোট
কেউ বলে ফালগুন , কেউ বলে পলাশের মাস,
আমি বলি আমার নতুন প্রভাত ।
কেউ বলে দখিনা , কেউ বলে মাতাল বাতাস
আমি বলি আমার দীর্ঘশ্বাস ।
কেউ বলে নদী কেউ তটিনী কেউ নাম দিয়েছে
নাম তরঙ্গিনী –
আমিতো তারে কোন নামে ডাকিনি – সে যে
আমার চোখের সৌন্দর্য্যদের আবাস ।
জোনাকির নাম নাকি আধাঁর মানিক , আমি তো
দেখি আগুন জ্বলে ধিকি ধিক-
খর বৈশাখে প্রথম যেদিন মেঘের মিচিলে মেঘের মিছিলে ঐ
আকাশ রঙিন…..
তৃষিত রিদয়ে বাজে আনন্দ বীণ্ আমি শুনি
ঝড়ের র্পূবাভাস !!!
বসন্ত নয় অবহেলা কবিতা
বসন্ত নয় অবহেলা কবিতা সবার কাছে অনেক জনপ্রিয়। তাই আমরা বসন্ত নয় অবহেলা কবিতা সকল তথ্য আমাদের এখানে তুলে ধরেছি। যাতে আপনারা বসন্ত নয় অবহেলা কবিতা সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে পারেন।
দর্পন কবির
বসন্ত নয়, আমার দরজায় প্রথম কড়া নেড়েছিলো অবহেলা
ভেবেছিলাম, অনেকগুলো বর্ষা শেষে শরতের উষ্ণতা মিশে এলো বুঝি বসন্ত!
দরজা খুলে দেখি আমাকে ভালোবেসে এসেছে অবহেলা
মধ্য দুপুরের তির্যক রোদের মতো
অনেকটা নির্লজ্জভাবে আমাকে আলিঙ্গন করে নিয়েছিলো অনাকাঙ্ক্ষিত অবহেলা
আমি চারপাশে তাকিয়ে দেখেছিলাম
আমার দীনদশায় কারো করুণা বা আর্তিব পেখম ছড়িয়ে আছে কি না
ছিলো না
বৃষ্টিহীন জনপদে খড়খড়ে রোদ যেমন দস্যুর মতো অদমনীয়
তেমনি অবহেলাও আমাকে আগলে রেখেছিলো নির্মোহ নিঃসংকোচিত
আমি অবহেলাকে পেছনে ফেলে একবার ভোঁ-দৌড় দিয়ে এগিয়ে গিয়েছিলাম
তখন দেখি আমার সামনে কলহাস্যে দাঁড়িয়েছে উপেক্ষা
উপেক্ষার সঙ্গেও একবার কানামাছি খেলে এগিয়ে গিয়েছিলাম তোমাদের কোলাহল মুখর আনন্দ সভায়
কি মিলেছিলো?
ঠোঁট উল্টানো ভৎসনা আর অভিশপ্ত অনূঢ়ার মতো এক তাল অবজ্ঞা
তাও সয়ে গিয়েছিলো একটা সময়
ধরেই নিয়েছিলাম আমার কোনো কালেই হবে না রাবেন্দ্রিক প্রেম
তোমাদের জয়গানে করতালিতে নতজানু থেকেছিলো আমার চাপা আক্ষেপ লজ্জা
বুঝে গিয়েছিলাম জীবনানন্দময় স্বপ্ন আমাকে ছোঁবে না
জয়নুলের রঙ নিয়ে কল্পনার বেসাতি
হারানো দিনের গানের ঐন্দ্রালিক তন্ময়তা
বা ফুল, পাখি, নদীর কাব্যালাপে কারা মশগুল হলো, এ নিয়ে কৌতূহল দেখাবার দুঃসাহস আমি দেখাইনি কখনো
এত কিছু নেই জেনেও নজরুলের মতো বিদ্রোহী হবো, সেই অমিত শক্তিও আমার ছিলো না
মেনে নেয়ার বিনয়টুকু ছাড়া আসলে আমার কিছুই ছিলো না
শুধু ছিলো অবহেলা, উপেক্ষা আর অবজ্ঞা
হ্যাঁ, একবার তুমি বা তোমরা যেন দয়া করে বাঁকা চোখে তাকিয়েছিলে আমার দিকে
তাচ্ছিল্য নয়, একটু মায়াই যেন ছিলো
হতে পারে কাঁপা আবেগও মিশ্রিত ছিলো তোমার দৃষ্টিতে
ওইটুকুই আমার যা পাওয়া
আমি ঝড়ে যাওয়া পাতা, তুমি ছিলে আকস্মিক দমকা হাওয়া
তারপরও অবহেলার চাদর ছাড়িয়ে
উপেক্ষার দেয়াল ডিঙিয়ে
ও অবজ্ঞার লাল দাগ মুছে জীবনের কোনো সীমারেখা ভাঙতে পারিনি আমি
এ কথা জানে শুধু অন্তর্যামী
অনেক স্বপ্নপ্রবণ হয়ে একবার ভেবেছিলাম
এই অবহেলা তুষারপাতের মুখচ্ছবি, উপেক্ষা কাচের দেওয়াল, অবজ্ঞা কুচকুচে অন্ধকার
এর কিছুই থাকবে না একটি বসন্তের ফুঁৎকারে
একটি ঝলমলে পোশাক গায়ে চড়িয়ে হাতের মুঠোয় বসন্ত নিয়ে অন্তত একটি সন্ধ্যাকে উজ্জ্বল করে নেবো
এমন ভাবাবেগও ছিলো আকাশের কার্নিশে লেপ্টে থাকা পেঁজা মেঘের মতো
ঐ মেঘ কখনো বৃষ্টি হয়ে নামেনি
তোমার বা তোমাদের নাগরিক কোলাহল কখনো থামেনি
অর্ধেক জীবন ফেলে এসে দেখি অনেক কিছু বদলে গেছে
সেকি!
কোথায় হারালো কৈশোরের দিনলিপি বিপন্ন করা অবহেলা
স্বপ্নকে অবদমনের স্বরলিপিতে আটকে ফেলা উপেক্ষা
আর তারুণ্যকে ম্রিয়মাণ করে রাখার অবজ্ঞা
ওরা আমাকে চোখ রাঙাতে পারে না ঠিক, তবে এখনো পোড় খাওয়া দিন বড্ড রঙিন
আমি আজ সমুদ্র জলে হাত রেখে বলে দিতে পারি
কোন ঢেউয়ে ভেসে বেড়াচ্ছে তোমাদের গোপন অশ্রুকণা
আকাশ পানে তাকিয়ে বুঝতে পারি কার দীর্ঘশ্বাসে ঝড়ে পড়ছে নক্ষত্র
এমনকি তুমি যে সম্রাজ্ঞীর বেশের আড়ালের মিহিন কষ্ট চেপে হয়েছো লাবণ্যময় পাষাণ, পাথর
এটাও দেখতে পাই অন্তরদৃষ্টি দিয়ে
আমি জানি, দীর্ঘশ্বাসে ভরা এ আখ্যান যদি পেতো কবিতার রূপ
সেই অবহেলা হতো বসন্ত স্বরুপ
বসন্ত নয় অবহেলা কবিতা pdf
যারা বসন্ত নয় অবহেলা কবিতা লাইন এবং বসন্ত নয় অবহেলা কবিতা লেখক কে জানতে চান। এই
রবি ঠাকুরের বসন্ত কবিতা
কবি রবি ঠাকুর বসন্ত নিয়ে কবিতা লিখেছেন সেই কবিতা এখানে তুলে ধরা হলো। আশাকরি বসন্তের কোকিল কবিতা আপনাদের অনেক ভালো লাগবে। বসন্ত কালের কবিতা এবং বসন্ত নিয়ে ছোট কবিতা গুলো এখানে দেওয়া হয়েছে।
‘আহা আজি এই বসন্তে,
এতো ফুল ফোঁটে,
এতো বাঁশি বাজে এতো পাখি গায়।’
কবি কাজী নজরুল ইসলাম বসন্ত কবিতা
‘বসন্ত আজ আসলো ধরায়,
ফুল ফুটেছে বনে বনে,
শীতের হাওয়া পালিয়ে বেড়ায় ফাল্গুনী মোর মন বনে।’
বসন্ত নিয়ে প্রেমের
তুমি চেয়েছিলে বসন্ত!
আমি বুকের সব পাজর ঝরালাম
নতুন পাতায় পাতায়
বসন্তের গানে গানে
তুমি আসবে বলে।
তুমি চেয়েছিলে বাসন্তী শাড়ী!
শূন্য বুক বিছালাম বন-অরণ্যে
নানা ফুলে ফুলে, বাসন্তী রং’য়ে
তুমি জড়াবে বলে।
তুমি চেয়েছিলে শুনতে-
কোকিলের কুহু-কুহু ডাক!
আমি আগুন ছড়ালাম
পালাশ ও শিমুলের ডালে
কোকিলের কুহু-কুহু ডাকে
তুমি মুগ্ধ হবে বলে।
এই ফাল্গুনে সাঝিয়েছি অঞ্জলি
আমার হৃদয়ের থালা ভরে
দেঁখা হোক, আঁদর হোক
ভালোবাসায়-
দু’টি হৃদয় একটি থালায়
শিমুল ও পলাশের ফুলে ফুলে।